জাতীয়

বর্ষবরণ অনুষ্ঠান নিয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদ উদীচীর

পহেলা বৈশাখে বাংলা বর্ষবরণের আয়োজনের সময় সংকোচন করে সরকারের সিদ্ধান্ত না মেনে নিজেদের প্রতিবাদী অনুষ্ঠান নিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।

সোমবার (১৫ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে উদীচী এ প্রতিবাদ ও নিন্দা জানায়। তাতে বলা হয়, উদীচীর বর্ষবরণ আয়োজন নিয়ে গণমাধ্যমে প্রচারিত তথ্য প্রতিমন্ত্রীর মন্তব্য দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। বর্ষবরণে উদীচীর আয়োজন দুঃখজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত বলে তিনি যে মন্তব্য করেছেন তাতে বিস্মিত হয়েছে উদীচী। সরকারের দায়িত্বশীল পর্যায় থেকে এ ধরনের বক্তব্য দুঃখজনক।

বিবৃতিতে বলা হয়, যেকোনো বিষয়ে প্রতিবাদ জানানো ও সংগঠিত হওয়া জনগণের সংবিধানসম্মত অধিকার। বর্ষবরণ আয়োজনের সময় সঙ্কোচন করতে সরকারের নির্দেশের প্রতিবাদে অনুষ্ঠান আয়োজন করে উদীচী সেই সংবিধানসম্মত অধিকারই চর্চা করেছে। একইভাবে সরকারের সিদ্ধান্ত অমান্য করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটও কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে বর্ষবরণের দিন বিকাল ৪টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে।

আরও বলা হয়, উদীচী সবসময়ই মনে করে, আবহমান বাংলার সবচেয়ে বড় অসাম্প্রদায়িক উৎসব পহেলা বৈশাখ বা বাংলা বর্ষবরণ। আর সেজন্যই বহু বছর ধরেই এ উৎসবের বিরুদ্ধে মৌলবাদী, ধর্মান্ধ গোষ্ঠী নানা ধরনের অপপ্রচার ও কুৎসা রটিয়ে চলেছে। আমরা জানি প্রতিবছর খ্রিস্টীয় নতুন বছরের জন্য নিরাপত্তাব্যবস্থা করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সমস্যা হয় না। কিন্তু কোন ঝুঁকি নেই বলে জানালেও নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে সন্ধ্যার মধ্যে বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্তের সাথে মৌলবাদী ও ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর অবস্থানের সাযুজ্য রয়েছে বলে মনে করে উদীচী।

বিবৃতিতে উদীচীর নেতারা বলেন, বর্ষবরণ উৎসবকে নির্দিষ্ট সময়ের ঘেরাটোপে বেঁধে দেয়ার হঠকারী সিদ্ধান্ত প্রকৃতপক্ষে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির কাছে নির্জলা আত্মসমর্পণ ছাড়া কিছুই নয়। এর মাধ্যমে পক্ষান্তরে আবহমান বাংলার সংস্কৃতিবিরোধী অন্ধকারের শক্তিকেই আস্কারা দেয়া হচ্ছে। এ ধরনের অযাচিত সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই মেনে নেয়ার মতো নয়। শুধু পহেলা বৈশাখই নয়, সারাবছরই দেশের বিভিন্ন স্থানে লোকজ সংস্কৃতির ধারক-বাহক নানা অনুষ্ঠান আয়োজন করতে গেলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনুমতি নেয়া বাধ্যতামূলক করাসহ নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ও সংস্কৃতিবান্ধব হিসেবে দাবিদার সরকারের কাছ থেকে এ ধরনের বাধা প্রদান কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এ ধরনের অপচেষ্টা কোনোভাবেই মেনে নেবে না উদীচীসহ দেশের শিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মীরা। তাই ভবিষ্যতেও এমন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে যতবার দরকার হবে, ততবারই উদীচী গান, নাচ ও নাটকের মতো সৃজনশীল হাতিয়ার নিয়ে মাঠে নামবে।

আরও খবর

Sponsered content